করোনাভাইরাস কেড়ে নিল ১০ লাখের অধিক মানবজীবন

করোনাভাইরাস

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। আর ২০২০ সালের ১১ জানুয়ারি করোনায় প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এবং ১১ মার্চ ২০২০ করোনাকে বৈশ্বিক মহামারি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে কয়েকটি দেশে মৃত্যু ও সংক্রমণের হার বেড়ে গেছে।

রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, মৃত্যুর সংখ্যা ৫ লাখ থেকে ১০ লাখে পৌঁছাতে মাত্র তিন মাস লেগেছে। এ বছরের জানুয়ারিতে চীনে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা রেকর্ড করা হয়। প্রতি ২৪ ঘণ্টার বিশ্বে ৫ হাজার ৪০০ জনের বেশি মারা যাচ্ছেন। এ হিসাবে প্রতি ঘণ্টায় ২২৬ জন ও প্রতি ১৬ সেকেন্ডে একজন মারা যাচ্ছেন।

অনেক বিশেষজ্ঞ প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে সন্দিহান। কারণ অনেক দেশ যথেষ্ট পরীক্ষা না করায় প্রকৃত সংক্রমণ বা মৃত্যুর চিত্র পাওয়া যায় না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস বলেছেন, কোভিড-১৯ সংক্রমণে প্রকৃত মৃত্যু ১০ লাখের বেশি হবে (প্রথম আলো ১ অক্টোবর ২০২০)।

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস করোনা মহামারিতে বিশ্বের ১০ লাখ মানুষের মৃত্যুকে একটি ‘যন্ত্রণাদায়ক মাইলফলক’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের কারণে মৃত্যুসংখ্যা ১০ লাখ পেরিয়ে গেছে এবং সংক্রমণের সংখ্যা ৩ কোটি ৩০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। গত ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ পর্যন্ত এ থেকে সুস্থ হয়েছে ২ কোটি ৩০ লাখের বেশি মানুষ।

২৪শে মার্চ ২০২০ এর পরের থেকে করোনাভাইরাসের প্রভাব আমাদের ব্যক্তিজীবন থেকে পরিবার, সমাজ, শিক্ষা, রাজনীতি বা রাষ্ট্রীয়, ব্যবসা – বাণিজ্য বা অর্থনীতির প্রতিটি শাখাকে প্রচন্ডভাবে প্রভাবিত করেছে।

করোনাভাইরাসের সামাজিক প্রভাবের মধ্যে আছে, ব্যবসা – বাণিজ্য-এর সনাতনী অবস্থা থেকে ডিজিটালাইজ হওয়া। এতে অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। আবার অনেকে ডিজিটাল প্লাটফর্মে কাজ করা শুরু করে ইতিবাচক প্রভাব রাখতে পেরেছেন। তবে সরাসরি নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে টুরিজম শিল্পে, যেমন ভ্রমনের কারনে বিমান, হোটেল, রেস্তোরা, সিনেমা, খেলাধুলা, নির্মান শিল্প  ইত্যাদিতে। স্বাস্থ্যখাতে দাঁতের ডাক্তারগন সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হয়েছেন। এর সরাসরি প্রভাবে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হারিয়ে বেকার হয়েছেন। স্বাভাবিকভাবে পৃথিবীতে নতুন করে দারিদ্রতার সৃষ্টি হয়েছে।

মার্চ মাসে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার পর কয়েক দফায় ছুটি বাড়িয়ে এখন অক্টোবর পর্যন্ত করা হয়েছে। সরকারি ও বেসরকারী প্রায় সকল প্রতিষ্ঠান অনলাইনে শ্রেণী কার্যক্রম চালু করেছে। যদিও প্রায় সকল শিক্ষকেরই এধরনের শিক্ষা কার্যক্রমের প্রস্তুতি ছিল না। অনলাইন কার্যক্রমের সবচেয়ে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে দরিদ্র জনগোষ্ঠির শিক্ষায়। কারন তাদের আয় যেমন নেতিবাচক প্রভাবিত তেমনি অনলাইন কার্যক্রমে অংশগ্রহনের জন্য অবশ্য দরকারি কম্পিউটার অথবা স্মার্ট মোবাইলের সাথে ইন্টারনেট কানেকশন ক্রয়ের সঙ্গতি নাই। আবার বিপুল সংখ্যক জনগোষ্টি এখনও  টেলিভিশন সুবিধার আওতার বাইরে। এই বিপুল সংখ্যক দরিদ্র, খেটে-খাওয়া মানুষের ভবিষ্যত দারুনভাবে অনিশ্চয়তায়।


Posted

in

,

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *